কাজী স্বাধীন: | শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট
চলতি বছর নওগাঁয় অন্তত আটটি সমিতি উধাও হয়েছে। এসব সমিতির অন্তত ৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। লাগাতার কর্মসূচি ও মামলা করেও ভুক্তভোগীরা সঞ্চিত টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।
জেলা সমবায় সমিতি কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর ১১টি উপজেলায় নিবন্ধিত সমবায় সমিতির সংখ্যা ১ হাজার ৬২০টি। এগুলোর মাধ্যমে ঋণদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে ৪৫০টি সমিতি। এর মধ্যে চলতি বছর আটটি সমিতির উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তারা গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন। সমিতিগুলো হলো সদর উপজেলায় সুরমা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, ডলফিন সমবায় সমিতি, জগৎসিংহপুর সূর্যমুখী বহুমুখী উন্নয়ন সমবায় সমিতি, বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন ও মেঘনা সেভিংস অ্যান্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, মহাদেবপুর উপজেলার ব্যতিক্রম ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড এবং মান্দা উপজেলার আল আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড।
আত্মগোপনে থাকা দোয়েল সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেনের বিবৃতিতে জানা যায়, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর থেকে সমিতির সদস্যরা সবাই একসঙ্গে আমানতের টাকা ফেরত চাইতে শুরু করে। সবাই একসঙ্গে জমা টাকা ফেরত চাওয়ায় বেকায়দায় পড়েন। গ্রাহকদের থেকে নেওয়া আমানতের প্রায় ২১ কোটি টাকা সঞ্চয় আছে। সেই টাকা থেকে ১৬ কোটি টাকা ক্ষুদ্রঋণ হিসেবে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কাছে ঋণ দেওয়া। ওই টাকা তুলতে না পারায় সদস্যদের টাকা ফেরত দিতে পারছেন না। কিন্তু সদস্যরা বিষয়টি মানতে চাইছেন না। টাকার জন্য অনেকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে আত্মগোপনে আছেন। প্রশাসন নিরাপত্তা দিলে এলাকায় ফিরে সম্পদ বিক্রি করে হলেও গ্রাহকদের সব টাকা ফেরত দেবেন।
জেলা সমবায় কর্মকর্তা খোন্দকার মনিরুল ইসলাম বলেন, নওগাঁয় ৪৫০টির মতো ঋণদানকারী সমিতির কার্যক্রম চলমান। এর মধ্যে কয়েকটি সমিতি সম্প্রতি গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত না দিয়ে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কার্যক্রম বন্ধ করেছে। গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে এসব সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সমিতির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ও থানায় একাধিক মামলা চলমান। তিনি বলেন, গ্রাহকদের থেকে টাকা নিয়ে তা উৎপাদনশীল খাতে না খাটিয়ে সমিতির কর্মকর্তারা জমিজমা কিংবা বাড়ি-গাড়ি কিনে থাকেন, এসব করতে গিয়ে সমিতিগুলো দেউলিয়া হয়ে যায়। ভবিষ্যতে যেকোনো সমিতির ওপর তাঁদের মনিটরিং কার্যক্রম বাড়ানো হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নওগাঁর সাবেক সম্পাদক বেলাল হোসেন ও সাবেক সদস্য কাজী স্বাধীন বলেন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সমবায় কার্যালয়ের অসতর্কতার কারণে এসব হচ্ছে। এতে নিরীহ ও অসহায় মানুষ সমিতির খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে নিবন্ধনের আগে ভালো করে যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। নিবন্ধন দেওয়ার পর সমবায় সমিতিগুলোকে মনিটর করতে হবে। খবর পাওয়া যাচেছ সমবায় সমিতির কিছু কর্মকর্তারাও এদের সাথে জরিত থাকার খবর লোক কানে শোনা যাচেছ। তাই সঠিক তদন্ত করে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও তদারকি বাড়াতে হবে।
জন সাধারন মানুষের দাবি উঠেছে। আমরা আশা করছি আগামীতে এই ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ নেয়া হবে
Posted ৮:৫১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin